স্বপন ইন্টারমিডিয়েট পাস করে আর লেখাপড়া করতে পারেনি। কী করবে যখন ভাবছিল তখন তার এক বড় ভাই তাকে পরামর্শ দিল যুবক ও যুব মহিলাদের সরকার নানান বিষয়ে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন কাজ শিখে নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায়। সে হাঁস-মুরগী পালনের ওপর প্রশিক্ষণ নিলো এবং বাড়ির পাশের ছোট জায়গায় খামার গড়ার কথা ভাবলো । কিন্তু টাকার প্রয়োজন। আত্মকর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ দিল। ফার্ম গড়ার পর মুরগীর নিয়মিত টীকা দেয়ার জন্য সে স্থানীয় একটা এনজিওএর সাথে যোগাযোগ করে তারও ব্যবস্থা করলো। এখন জনাব স্বপনের ফার্ম ভালই চলছে । এক্ষেত্রে যুব অধিদপ্তর, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও এনজিও প্রতিষ্ঠান সবাই তার ব্যবসায়ে সহায়ক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। যাদের সহযোগিতা বাতিরেকে স্বপনের পক্ষে এই ফার্ম গড়ে তোলা ও ভালোভাবে চালানো সম্ভব ছিল না।
একটা ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনায় সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যে সেবার প্রয়োজন পড়ে তাকেই ব্যবসায়ের সহায়ক সেবা বলে। ব্যবসায়ের সাথে ঝুঁকি জড়িত। তদুপরি ব্যবসায় শিখতে হয়, বুঝতে হয়। এখানে নানান ধরনের নিয়ম ও বাধ্য-বাধ্যকতা থাকে। তাই কাউকে ব্যবসায়ে নামতে এবং এক্ষেত্রে সফলতা পেতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা বা সেবার প্রয়োজন পড়ে। এরূপ সেবা প্রাপ্তি যত সহজ হয় ততই নতুন নতুন উদ্যোক্তা এসে ব্যবসায়ে নামে। পুরনো ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যায়। এতে দেশের সামগ্রিক ব্যবসায় পরিবেশ উন্নত হয় ।
চীনে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের শিল্প গঠনে সহযোগিতা করার জন্য সরকারি বিভিন্ন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রতিটা এলাকায় বা অঞ্চলে কাজ করে। কেউ শিল্প গড়তে চাইলে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তার জন্য কোন ধরনের ব্যবসায়, কোন এলাকায় করা উচিত হবে এ বিষয়ে পরামর্শ দেয়। অতঃপর প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করে তা সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিলে তারা শিল্প এলাকায় প্রয়োজনীয় পরিমাণ জমি বরাদ্দ, লাইসেন্স প্রদান ইত্যাদি কাজ করে দেয়। অতঃপর গ্যাস, পানি, বিদ্যুতসহ ইউটিলিটি সার্ভিসের লোকজন এসে অনেকটা স্ব-উদ্যোগেই এগুলোর ব্যবস্থা করে। ব্যাংক ঋণ দেয়। দ্রুত সময়ে শিল্প তার কাজ শুরু করতে পারে। এ ব্যবস্থা চীনকে দ্রুত অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে পরিণত করতে সহায়তা করেছে।
আরও দেখুন...